আমার যখন 'মুসলমানি' করানো
হয় সেই সময়টার কথা আমার মনে আছে।আমি বেচারা ছোট মানুষ বুঝতে পারছিনা আমাকে
নিয়ে এত টানা হ্যাচড়া কেন।অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ডাকাতের মত দেখতে ডাক্তার
গুলো ঠিক কি করল সেটাও বুঝিনি ঠিকমত।এরপর দেখলাম আমার প্রসাব ত্যাগ করার
অঙ্গে ব্যান্ডেজ করা!আমিতো সারাদিন শুয়েই ছিলাম।আমাকে বলা হল এই প্রক্রিয়ার
নাম মুসলমানি,এবং এই কাজটা না করলে মুসলমান হওয়া যায়না!(পরবর্তীতে
এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং কারণ জানতে পারি)তবে আমার মুসলমান হওয়াটা মনে
হয় খুবই বড় কোন ঘটনা ছিল কারণ এই উপলক্ষে বাড়িতে বিশাল উৎসবের মত আয়োজন করা
হল।সব আত্মীয় স্বজনরা এলেন,খালি হাতে এলেন না আমার জন্য নানা কিছু উপহার
নিয়ে আসলেন।বেশ কিছু খেলনা পেয়ে ভাবলাম-মুসলমান হওয়া ব্যাপারটা খারাপ
না,যদিও প্রস্রাব করার সময় ব্যাথা লাগে!এবং এই আমাকে উপলক্ষ করে এই উৎসবের
আয়োজন দেখে আমি বিমোহিত হয়েছিলাম।
আমার বোনের কবে প্রথম ঋতুস্রাব হল এই ব্যাপারটি আমি একই পরিবারের সদস্য হয়েও জানলাম না।এই ব্যাপারটিকে চরম গোপনীয় করে রাখা হয় এবং এমন ভাবে বাড়িতে স্যানিটারি ন্যাপকিন আনা হত যেন কোন নিষিদ্ধ বস্তু আনা হচ্ছে।এটা শুধু আমাদের পরিবারেই না,দেশের প্রতিটি পরিবারেই মনে হয় এমনটাই ঘটে।আমি বলছিনা মেয়েদের প্রথম স্রাবের সময় উৎসব করে সেটা সবাইকে জানাতে হবে তবে অন্তত পরিবারের সবার সেটা জানা উচিত।এতে দুটি ঘটনা ঘটবে-
১।সদ্য কিশোরী মেয়েটিকে পরিবারের সবাই মানসিক সাপোর্ট দিতে পারবে
২।মেয়েটি জানবে তার এই পরিবর্তন কোন হঠাৎ করে ঘটা,অস্বাভাবিক এবং অপবিত্র কোন ঘটনা না।এটা একটি খুবই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা যার ভিতর দিয়ে যেতে পৃথীবির প্রতিটি নারীকে।আর অপবিত্রতার তো কোন প্রশ্নই আসেনা।
মানুষের জীবনের জন্ম,মৃত্যুর মত স্বাভাবিক ঘটনা হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাব। রজঃস্রাব (ইংরেজি: Menstruation) হলো উচ্চতর প্রাইমেট বর্গের স্তন্যপায়ী স্তরী- একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর মাসিক বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা জরায়ুতে চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর(এন্ডমেট্রিয়াম) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ-তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই ঋতুস্রাব।
আমাদের দেশে সকলের মধ্যে এই অতি-স্বাভাবিক বিষয়টি একটা ট্যাবু হিসেবে কাজ করে।ব্যাপারটাকে এমন ভাবে লুকিয়ে রাখা হয় যেন মেয়েটি কোন অপরাধ করে ফেলেছে।তাই প্রথম স্রাবের পর কিশোরী মেয়েটি দিশেহারা হয়ে পড়ে অধিকাংশ সময়েই।
নারীর রয়েছে সন্তান জন্মদান,সন্তান ধারণ এবং সন্তানকে নিজ শরীর থেকে খাদ্যদানের অসাধারণ ক্ষমতা যা নেই কোন পুরুষের।তার এই অসাধারণ ক্ষমতা অর্জনের স্বীকৃতিই হল তার ঋতুস্রাব।এই ঘটনাটির মাধ্যমে প্রকৃতি তার এই অনন্যসাধারণ ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়।অথচ ঘটনাটি নিয়ে এমন আচরন করা হয় যেন এটা কোন অস্বাভাবিক ঘটনা,এটি মেয়েটির দোষ,এটি একটি অপবিত্র ঘটনা এবং এটি লুকিয়ে রাখতে হবে সবার আড়ালে।একটা মেয়ে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে বলতে পারেনা যে আমার মাসিক চলছে।এমন একটা স্বাভাবিক ঘটনা কেন এমন ট্যাবু হল?
এটা পুরুষতান্ত্রিক একটা প্রচারনার ফল মাত্র।পুরুষের নারীকে দমিত করে রাখার একটা অস্ত্র।"নারী অপবিত্র,নারী অশূচি,নারী দুর্বল"-এই ধারনা গুলো প্রচার করে নারীকে দমিত করে রেখেছে পুরুষ।এখন তো তাও অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।আগে প্রথম স্রাবের সময় মেয়েটিকে আলাদা ঘরে রাখা হত-প্রায় আটকে রাখা হত।পুরুষ নারীকে বুঝিয়েছে,ঋতুস্রাবকালীন তোমার কোন কাজ করার ক্ষমতা নেই,কোন কিছু স্পর্শ করার অধিকার নেই,ধর্ম বিধান দিচ্ছে তুমি অশূচী-এই সময়ে তোমার ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করারও অধিকার নেই - এই সব বিধি বিধান শুনতে শুনতে নারীও মানসিক ভাবে ছোট হয়ে যায়,ভাবতে শুরু করে আসলেই প্রকৃতি শাস্তি দিচ্ছে তাকে।হীনমন্যতায় ভোগে সে।এই সময়ে গুটিয়ে নেয় নিজেকে।
আসলে এই সকল বিধি বিধানের কোন যৌক্তিকতা নেই।এগুলো পুরুষতান্ত্রিক প্রচারনা মাত্র যা যুগ যুগ ধরে নারীকে বন্দি করে রাখার হাতিয়ার হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা যেখানে অপবিত্রতার কিছু নেই,যেটা নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগারও কিছু নেই।আমি বলছিনা যে মাসিক হলে সেটা ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করতে হবে তবে এটা নিয়ে লুকোচুরিরও কিছু নেই।নিজের পরিবারে এই বিষয় গুলো আলোচনা হওয়া উচিত যেন ছেলে মেয়েরা সহজ জিনিসকে সহজ ভাবে নিয়েই বড় হয়ে ওঠে।হিপোক্রিট সমাজের নানা রকম প্রথায় বিভ্রান্ত হয়ে যেন তারা স্বাভাবিক জিনিসকে অস্বাভাবিক না ভাবে।
আজকালকার দিনে এই সময়ে মেয়েরা সব রকম স্বাভাবিক কাজে অংশ নিতে পারছে।সেখানে এই বিষয়টিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রাখার পুরুষতান্ত্রিক প্রথাকে ভেঙে ফেলা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
নারী ও পুরুষের মধ্যে দৈহিক কোন পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই।নারীর অবস্থান পুরুষের নীচে না,পুরুষের পাশে।নারীর যে বৈশিষ্ট্যটি তাঁকে অনন্য করেছে সেটা হল এই ঋতুস্রাব।এটা নারীর লজ্জা নয়,নারীর গর্ব!
(একজন ছেলে হিসেবে ঋতুস্রাব কালীন অস্বস্তি টা কেমন সেটা আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।নারীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেই এই লেখাটার ইতি টানছি।একজন মেয়ের যখন প্রথম স্রাব হয় সেটার মানে হল প্রকৃতি তাঁকে জানায় যে সে গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত হয়েছে।আমরা মাও নিশ্চয়ই কোন এক আলোকজ্জ্বল দিনে প্রকৃতির কাছে থেকে এই বার্তাটি পেয়েছিল,যার কারণে আমি আজ পৃথীবিতে...)
আমার বোনের কবে প্রথম ঋতুস্রাব হল এই ব্যাপারটি আমি একই পরিবারের সদস্য হয়েও জানলাম না।এই ব্যাপারটিকে চরম গোপনীয় করে রাখা হয় এবং এমন ভাবে বাড়িতে স্যানিটারি ন্যাপকিন আনা হত যেন কোন নিষিদ্ধ বস্তু আনা হচ্ছে।এটা শুধু আমাদের পরিবারেই না,দেশের প্রতিটি পরিবারেই মনে হয় এমনটাই ঘটে।আমি বলছিনা মেয়েদের প্রথম স্রাবের সময় উৎসব করে সেটা সবাইকে জানাতে হবে তবে অন্তত পরিবারের সবার সেটা জানা উচিত।এতে দুটি ঘটনা ঘটবে-
১।সদ্য কিশোরী মেয়েটিকে পরিবারের সবাই মানসিক সাপোর্ট দিতে পারবে
২।মেয়েটি জানবে তার এই পরিবর্তন কোন হঠাৎ করে ঘটা,অস্বাভাবিক এবং অপবিত্র কোন ঘটনা না।এটা একটি খুবই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা যার ভিতর দিয়ে যেতে পৃথীবির প্রতিটি নারীকে।আর অপবিত্রতার তো কোন প্রশ্নই আসেনা।
মানুষের জীবনের জন্ম,মৃত্যুর মত স্বাভাবিক ঘটনা হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাব। রজঃস্রাব (ইংরেজি: Menstruation) হলো উচ্চতর প্রাইমেট বর্গের স্তন্যপায়ী স্তরী- একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর মাসিক বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা জরায়ুতে চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর(এন্ডমেট্রিয়াম) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ-তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই ঋতুস্রাব।
আমাদের দেশে সকলের মধ্যে এই অতি-স্বাভাবিক বিষয়টি একটা ট্যাবু হিসেবে কাজ করে।ব্যাপারটাকে এমন ভাবে লুকিয়ে রাখা হয় যেন মেয়েটি কোন অপরাধ করে ফেলেছে।তাই প্রথম স্রাবের পর কিশোরী মেয়েটি দিশেহারা হয়ে পড়ে অধিকাংশ সময়েই।
নারীর রয়েছে সন্তান জন্মদান,সন্তান ধারণ এবং সন্তানকে নিজ শরীর থেকে খাদ্যদানের অসাধারণ ক্ষমতা যা নেই কোন পুরুষের।তার এই অসাধারণ ক্ষমতা অর্জনের স্বীকৃতিই হল তার ঋতুস্রাব।এই ঘটনাটির মাধ্যমে প্রকৃতি তার এই অনন্যসাধারণ ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়।অথচ ঘটনাটি নিয়ে এমন আচরন করা হয় যেন এটা কোন অস্বাভাবিক ঘটনা,এটি মেয়েটির দোষ,এটি একটি অপবিত্র ঘটনা এবং এটি লুকিয়ে রাখতে হবে সবার আড়ালে।একটা মেয়ে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে বলতে পারেনা যে আমার মাসিক চলছে।এমন একটা স্বাভাবিক ঘটনা কেন এমন ট্যাবু হল?
এটা পুরুষতান্ত্রিক একটা প্রচারনার ফল মাত্র।পুরুষের নারীকে দমিত করে রাখার একটা অস্ত্র।"নারী অপবিত্র,নারী অশূচি,নারী দুর্বল"-এই ধারনা গুলো প্রচার করে নারীকে দমিত করে রেখেছে পুরুষ।এখন তো তাও অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।আগে প্রথম স্রাবের সময় মেয়েটিকে আলাদা ঘরে রাখা হত-প্রায় আটকে রাখা হত।পুরুষ নারীকে বুঝিয়েছে,ঋতুস্রাবকালীন তোমার কোন কাজ করার ক্ষমতা নেই,কোন কিছু স্পর্শ করার অধিকার নেই,ধর্ম বিধান দিচ্ছে তুমি অশূচী-এই সময়ে তোমার ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করারও অধিকার নেই - এই সব বিধি বিধান শুনতে শুনতে নারীও মানসিক ভাবে ছোট হয়ে যায়,ভাবতে শুরু করে আসলেই প্রকৃতি শাস্তি দিচ্ছে তাকে।হীনমন্যতায় ভোগে সে।এই সময়ে গুটিয়ে নেয় নিজেকে।
আসলে এই সকল বিধি বিধানের কোন যৌক্তিকতা নেই।এগুলো পুরুষতান্ত্রিক প্রচারনা মাত্র যা যুগ যুগ ধরে নারীকে বন্দি করে রাখার হাতিয়ার হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা যেখানে অপবিত্রতার কিছু নেই,যেটা নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগারও কিছু নেই।আমি বলছিনা যে মাসিক হলে সেটা ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করতে হবে তবে এটা নিয়ে লুকোচুরিরও কিছু নেই।নিজের পরিবারে এই বিষয় গুলো আলোচনা হওয়া উচিত যেন ছেলে মেয়েরা সহজ জিনিসকে সহজ ভাবে নিয়েই বড় হয়ে ওঠে।হিপোক্রিট সমাজের নানা রকম প্রথায় বিভ্রান্ত হয়ে যেন তারা স্বাভাবিক জিনিসকে অস্বাভাবিক না ভাবে।
আজকালকার দিনে এই সময়ে মেয়েরা সব রকম স্বাভাবিক কাজে অংশ নিতে পারছে।সেখানে এই বিষয়টিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রাখার পুরুষতান্ত্রিক প্রথাকে ভেঙে ফেলা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
নারী ও পুরুষের মধ্যে দৈহিক কোন পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই।নারীর অবস্থান পুরুষের নীচে না,পুরুষের পাশে।নারীর যে বৈশিষ্ট্যটি তাঁকে অনন্য করেছে সেটা হল এই ঋতুস্রাব।এটা নারীর লজ্জা নয়,নারীর গর্ব!
(একজন ছেলে হিসেবে ঋতুস্রাব কালীন অস্বস্তি টা কেমন সেটা আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।নারীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেই এই লেখাটার ইতি টানছি।একজন মেয়ের যখন প্রথম স্রাব হয় সেটার মানে হল প্রকৃতি তাঁকে জানায় যে সে গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত হয়েছে।আমরা মাও নিশ্চয়ই কোন এক আলোকজ্জ্বল দিনে প্রকৃতির কাছে থেকে এই বার্তাটি পেয়েছিল,যার কারণে আমি আজ পৃথীবিতে...)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন